দেশের সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (৪ জানুয়ারি) রাজধানীতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ব্রিটিশ অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের চার সংসদ সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাতকালে এ কথা বলেন তিনি।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
তিনি জানান, বৈঠকে অংশ নেওয়া চার সংসদ সদস্য হলেন— রুশনারা আলী, জনাথন রেনল্ডস, মোহাম্মদ ইয়াসিন এবং টম হান্ট।
ব্রিটিশ এমপিদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, দেশে নির্বাচন কমিশন অনেকটাই স্বাধীন। আমরা আপনাদের ওয়েস্টমিনস্টারের গণতন্ত্র অনুসরণ করি। নির্বাচন পর্যবেক্ষক এলে আমাদের কোনো সমস্যা নেই।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে অতীতে সামরিক শাসকদের কাছ থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই করার দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে আওয়ামী লীগের। সামরিক শাসকরা বন্দুক ব্যবহার করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করত এবং রাজনৈতিক দল গঠন করে রাজনীতিতে পৃষ্ঠপোষকতা করত।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে উদ্যোগ নিতে ব্রিটিশ সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার ফলে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো নানানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং ভোজ্যতেল আসত। কিন্তু যুদ্ধের কারণে এই পণ্যগুলোর আমদানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে এই জিনিসগুলোর দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে যুক্তরাজ্যের উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা সেখানে যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগকে স্বাগত জানাব।
প্রেস সচিব জানান, ব্রিটিশ এমপিরা বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অবকাঠামোগত উন্নয়নে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা এ উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন। বিশেষ করে তারা মেট্রোরেল, পদ্মা সেতু ও বঙ্গবন্ধু টানেলসহ কানেকটিভিটির উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। বাংলাদেশের উন্নয়নে এসব অবকাঠামো খুবই সহায়ক হবে বলে মনে করেন তারা।
ব্রিটিশ সংসদ সদস্যরা জানান, ব্রিটেন বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজ করতে চায়। তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার। যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিরা অনেক পরিশ্রমী এবং তারা ব্রিটিশ অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রেখে চলেছেন।
এ ছাড়া যুক্তরাজ্য জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করবে বলেও জানান তারা।
বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে ব্রিটিশ সহায়তার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সরকার জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে আন্তরিক এবং নিজস্ব সম্পদ দিয়ে অভিযোজন ও প্রশমন কার্যক্রম শুরু করেছে। বঙ্গবন্ধু প্রাথমিকভাবে উপকূলীয় অঞ্চলে বৃক্ষরোপণ এবং ৭৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দিয়ে বহুমুখী সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণের মাধ্যমে প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন।
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, কমনওয়েলথ দেশগুলোর অভিভাবক হিসেবে তিনি সবসময় বাংলাদেশের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন।
এ সময় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকেও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশের সরকারপ্রধান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ এম. জিয়াউদ্দিন, মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন।
© All rights reserved © 2025 Jatiyokhobor.com
Leave a Reply