জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার পর থেকে গত চার দিন মেট্রোরেলের স্টেশন দুটিতে ছিল মানুষের উপচেপড়া ভিড়। ভোর থেকেই দীর্ঘ লাইনে যাত্রীদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। অথচ পঞ্চম দিনে দেখা গেল বিপরীত চিত্র।
সোমবার (২ জানুয়ারি) সকাল থেকে আগারগাঁও এবং উত্তরা মেট্রো স্টেশনের কোনটিতেই তেমন লাইন চোখে পড়েনি। যারা ভ্রমণ করতে আসছেন, তারা সরাসরি প্ল্যাটফর্মে ঢুকে টিকিট সংগ্রহ করছেন। টিকিট নিয়ে মেট্রো স্টেশনে অপেক্ষা করছেন ট্রেনের জন্য এবং সময় অনুযায়ী ট্রেন আসার সঙ্গে সঙ্গে উঠে পড়ছেন।
ভ্রমণে আসা কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়। তাদের মধ্যে মিরপুর থেকে আসা রহমত উল্লাহ বলেন, আমার ছেলে মেট্রোরেলে ওঠার বায়না ধরেছে তাই তাকে নিয়ে এসেছি। কিন্তু অন্যদিন টিভিতে যেমন ভিড় দেখেছি, আজ তেমন কিছু চোখে পড়েনি। সরাসরি টিকিট কেটে ট্রেনে উঠেছি।
শেওড়াপাড়া থেকে আসা আকবর শেখ বলেন, মেট্রোরেলের কারণে প্রতিদিন অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে আমাদের। কিন্তু আজ স্বপ্নের মেট্রোরেলে ভ্রমণ করে সব কষ্ট দূর হয়ে গেছে। আমি আগারগাঁও স্টেশন থেকে টিকিট কেটেছি। মনে করছিলাম অনেক দীর্ঘ লাইন হবে। কিন্তু এখানে এসে তো পুরো অবাক। কোনো লাইন নেই। টিকিট কেটেই ট্রেনে উঠতে পেরেছি। খুবই ভালো লাগছে।
গাজীপুর থেকে আসা হাসান নামে এক তরুণ বলেন, ছোট বোনকে নিয়ে মেট্রোরেলে ভ্রমণ করতে এসেছি। খুলে দেওয়ার পর থেকে কাজের ব্যস্ততায় এ তিন দিন আসতে পারিনি। কিন্তু আজ এসে খুব ভালো লাগছে। কোনো লাইন নেই, ভিড় নেই। খুবই সুন্দর একটা পরিবেশ। সরকারের এ ধরনের উদ্যোগকে অবশ্যই সাধুবাদ জানাই।
এদিকে, পঞ্চম দিনের শুরুতেই আগারগাঁও স্টেশনে টিকিট কাটতে গিয়ে ইলেকট্রিক ভেটিং মেশিনের সমস্যা দেখা গেছে। এখানকার তিনটি মেশিনের মধ্যে একটি সচল। সেটিতেই টিকিট কেটে ট্রেনে উঠছেন যাত্রীরা। অন্য একটি বন্ধ আর অপরটির নেটওয়ার্ক সংযোগ আসা-যাওয়া করছিল।
অন্যদিকে উত্তরা স্টেশনেও আজ ছিল না যাত্রীদের চাপ। অপেক্ষা ছাড়াই টিকিট সংগ্রহ করে মেট্রোরেল ভ্রমণ করতে পারছেন যাত্রীরা। এখানে তিনটি টিকিট কাটার ইলেকট্রিক মেশিনের মধ্যে একটি বন্ধ। আর অন্য দুটি সচল রয়েছে। সেগুলো থেকে যাত্রীরা টিকিট কাটছেন। এ ছাড়া ম্যানুয়ালি দুটি টিকিট কাউন্টার থেকে যাত্রীদের টিকিট কাটতে দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে জানা গেছে, শনিবার ৯ হাজার ২৮৯টি সিঙ্গেল জার্নি টিকিট (এসজেটি) বিক্রি করে ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৭১০ টাকা আয় হয়েছে। এক হাজার ৩৪৮টি এমআরটি পাস বিক্রি করে ৬ লাখ ৭৪ হাজার টাকা আয় হয়েছে। সবমিলিয়ে মোট ১২ লাখ ৩১ হাজার ৭১০ টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে।
এর আগে, দ্বিতীয় দিন (শুক্রবার) মাত্র ১ লাখ ৩৯ হাজার ৯৮০ টাকা এবং প্রথম দিনে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৫২০ টাকা আয় হয়েছিল।
© All rights reserved © 2025 Jatiyokhobor.com
Leave a Reply